চৌপদীসমগ্র


শীতকালীন চৌপদী #১

চোখে যার আদিম মাদকতা,

কেশে যার ওড়ে না বলা কথা,

আমার কী উপায় বলো

না ছুঁয়ে তার বিহবলতা?

শীতকালীন চৌপদী #২

স্বপ্ন,তোমার রঙটা যেন কী?

লাল,নীল,হলদে,না খাকি?

তোমার ‘পরে তোমাকে সাজাবো

আমায় দেখা দেবে কি?

শীতকালীন চৌপদী #

আমার এই একাকীত্ব আমার অলঙ্কার,
একাকী জীবন আমার যেন মণিকান্ত হার।
আলোর মিছিল,তবু আঁধার ঘেরে আমায়,
নিঃসঙ্গতার আলো আজ পরম সত্য আমার।

শীতকালীন চৌপদী #৪

ওগো সাতসমুদ্রের মুক্তোগলা জলকণা

জানো কি তোমাতে মেশে কত মেঘের কান্না?

জানো কি কতটা অতল জলে অপেক্ষায় আছে

কোনো এক দিকহারা নাবিকের জলকন্যা?

শীতকালীন চৌপদী #

প্রাণবাহী মেঘ,তুমি উড়ে কোথা যাও?
তুমি কি উড়ে গিয়ে তাহারে শুধাও?
আমার দেয়া হৃদয়চেরা মুক্তো
সে কি আর পেয়েছে কোথাও?

শীতকালীন চৌপদী #৬

আমার মুখে ম্যাপ এঁকে যায় শীতের বাতাস,
হিম বাতাসে আমি ত্বকে চিত্ররেখা ফোটাই,
আমার গুড়ো চুলে ঢেকে যায় ধূসর আকাশ,
মেয়ে,এই শীতে আমি আরেকটিবার তোমাকে চাই।

বাসন্তী চৌপদী #১

আমাদের দুজনার মাঝে কতটা জল বয়ে গেছে,

কতটা গভীর হয়েছে দুজনার মাঝে খাদ,

ওপারে দাঁড়িয়ে কখনো ভেবেছ,কতটা চোখের জলে

ক্ষয়ে ক্ষয়ে ভেঙে পড়েছে আলো-জ্বলা আকাশের ছাদ?

বাসন্তী চৌপদী #২

হৃদয়টা যেন একলা আকাশ,যেথায়

দুঃখের রাতে কষ্টগুলো তারা হয়ে যায়,

দেয়ালে দেয়ালে মিটমিট করে স্মৃতির কালো ফ্রেমে,

ইনসোমনিয়া গাঢ় হয়ে আসে নস্টালজিয়ার ওমে।

বাসন্তী চৌপদী #৩

তোমায় যেচে মরেছি আমি, তবু কেন বাড়িয়ে দাওনি হাত?

পরের জনমে আমার হবে-এ তোমার কেমন অজুহাত?

মৃত্যুই যদি শেষ কথা হবে, যদি মায়া হবে দোঁহা মাঝে বাঁধ

তবে কি ধরণী কেবলই কুহক-তার সনে বৃথা এত বাদানুবাদ?

বাসন্তী চৌপদী #৪

মহাজগতের সব অণু-পরমাণু খেলার ছলে

তুচ্ছ করে দাও তুমি একফোঁটা চোখের জলে,

কতটা নিবিড় হলে তোমায় ভালোবাসার অসুখ

সেই একফোঁটা জলে হৃদয়ের তেপান্তর পোড়ে!

শারদীয় চৌপদী #১

এক অসুর মরিলে খুশি হয় দেবদূতের দল,

ভাবে আরেকটু পরিশুদ্ধ হলো এ ধরণীর তল,

তারা কি কখনো ভাবে, কে তারে বানাল অসুর?

কোন জন্মের অনলে পুড়ল তার চোখের জল?

 

Comments