কাঁটাতারে রক্তের দাগ

সালটা ২০১২।

আমি গেছিলাম ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। সীমান্তবর্তী এক বাড়িতে আমার অবস্থান। এক বিকেলে এলাকার নবীন ডাক্তারের সাথে বেড়াতে বের হয়েছি। সীমান্তের কাছে এসে আমার কেন যেন শখ হলো সীমান্ত দেখতে যাবার। তখন ডাক্তার আমাকে বললেন, “বর্ডারের কাছে গেলে বিএসএফ গুলি করে। কিছুদিন আগে একজন মারা গেছে ওদের গুলিতে ।”

আমি যারপরনাই বিস্মিত হয়েছিলাম-কারণ আমি তখনো ‘ট্রিগার-হ্যাপি’ বিএসএফের খুনে স্বভাবের সাথে পরিচিত ছিলাম না। এক দেশের সীমান্তরক্ষী আরেক দেশের নাগরিক কেন মারবে, সেটা বোঝার জ্ঞান আমার ছিল না। কিন্তু আমার মত ভাগ্যবান অনেকেই নন।

বাংলাদেশের সাথে ভারতের সীমানা ৪১৫৬ কিলোমিটার। এটি বিশ্বের ইউএস-ক্যানাডা আর রাশিয়া-কাজাখস্তানের পর তৃতীয় দীর্ঘতম সীমানা। এর ৭০% জায়গা ৮-ফুট উঁচু কাঁটাতারের বেড়া আর ইলেক্ট্রিক তার দিয়ে সুরক্ষিত। গ্লোবাল পোস্টের মতে– এটা বিশ্বের নিকৃষ্টতম সীমান্ত । এ সীমান্তই বিশ্বের সবচেয়ে প্রাণঘাতী সীমান্ত, যেখানে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ নিরস্ত্র বাংলাদেশিদের গুলি করে হত্যা করে নিয়মিত।

সীমান্তে হত্যা শুরু হয়েছিল ১৯৭২ সাল থেকেই। মাঝে কেবল ১৯৭৩ সালে সীমান্তে রক্ত ঝরেনি। এরপর থেকে ২০২০ সালের জুন মাস পর্যন্ত সীমান্তে বিএসএফ হত্যা করেছে ১৫২২ জন বাংলাদেশিকে। বছরে গড়ে প্রায় ৩২ জন করে বাংলাদেশি নিহত হয় বিএসএফের হাতে। নিচে আমরা সীমান্তে নিহত বাংলাদেশিদের সংখ্যা দেখব।

সালনিহত বাংলাদেশিদের সংখ্যা
১৯৭২-১৯৮১১০৩
১৯৮২-১৯৯১১৮৩
১৯৯২-১৯৯৯১৪৯
২০০০-২০০৯৮০৪
২০১০-২০১৯২৯৪
জানুয়ারি,২০২০- জুন,২০২০১৩
মোট১৫২৩

ছকটা বিশ্লেষণ করলে আমরা দেখতে পাব- ১৯৭২ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত মারা গেছেন ৪৩৫ জন, ২০০০ থেকে ২০১০ পর্যন্ত মারা গেছেন ৯৬৭ জন আর ২০১১ থেকে ২০২০ এর জুন পর্যন্ত মারা গেছেন ২২৯ জন। সবচেয়ে বেশি মারা গেছেন ২০০৬ সালে-১৫৫ জন! এরপরের বছর মারা গেছেন ১১৮ জন। ২০১৯ সালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান- ২০১০ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত মারা গেছেন ২৯৪ জন। এছাড়া ২০০০- ২০১৭ এর মাঝে ১৩২৯ জন বাংলাদেশিকে নির্যাতন আর ১৫ নারীকে ধর্ষণ করেছে বিএসএফ। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ২০১৩ সালে ট্রিগার হ্যাপি নামে বিএসএফের কার্যক্রম নিয়ে একটি রিপোর্ট করে। সেখান এপার ওপার দুপারের মানুষই বিএসএফের কুকীর্তির কথা তুলে ধরে।

ফেলানী খাতুনের কথা মনে আছে? সেদিন কাঁটাতারে ঝুলে ছিল এক টুকরো বাংলাদেশ।

ফেলানী বিয়ের জন্য বাংলাদেশে আসছিল তার বাবা নূরুল ইসলামের সাথে। সীমান্তরক্ষীদের তিন হাজার রুপি ঘুষ দেন নূরুল ইসলাম। নূরুল ইসলাম পার হয়ে যান, কিন্তু ফেলানীর জামা আটকে যায় কাঁটাতারে। তখন বিএসএফ তাকে গুলি করে। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ঝুলে থাকে ফেলানী, রক্তক্ষরণে আধা ঘণ্টার মধ্যে মারা যাবার পূর্বে বারবার পানি পানি বলে চিৎকার করছিল মেয়েটি। এরপরও পাঁচঘণ্টা ঝুলে ছিল তার লাশ, এরপর বিএসএফ বাঁশ দিয়ে তার লাশ নামিয়ে নিয়ে যায়। লাশ ফেরত দেবার আগে তার গা থেকে বিয়ের সব গয়না খুলে রেখেছিল ওরা।

ফেলানীকে হত্যা করার পর সারাবিশ্বে শোর পড়ে যায়, বাংলাদেশ সোচ্চার হয় সীমান্ত হত্যার বিরুদ্ধে। ওপার বাংলায় কবির সুমন গান বাঁধেন ফেলানীর জন্য-

শোনো বিএসএফ, শোনো হে ভারত

কাঁটাতারে গুনগুন

একটা দোয়েল বসেছে যেখানে

ফেলানী হয়েছে খুন।

রাইফেল তাক কর হে রক্ষী

দোয়েলরও ভিসা নেই

তোমার গুলি বাংলার পাখি

কাঁটাতারে ঝুলবেই।

বিএসএফ পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট সামরিক আদালত বসায়, যার প্রধান ছিলেন বিএসএফ ডিজি (কমিউনিকেশনস) এসপি ত্রিবেদী। এই আদালত অভিযুক্ত ১৮১ ব্যাটেলিয়ানের কন্সটেবল অমিয় ঘোষকে উপযুক্ত প্রমাণের অভাবে বেওসুর খালাস ঘোষণা করে। এই হলো বিএসএফের বিচারের নমুনা।

২০০৯ সালের ১৩ মার্চ। সীমান্তের ২০ মিটারের মধ্যে মাছধরা নিয়ে বিএসএফ বাংলাদেশি জেলেদের সাথে তর্কে জড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে এলোপাথাড়ি গুলি ছোঁড়ে তারা। দূরে গরু চড়াচ্ছিল দুই কিশোর আব্দুর রাকিব আর আরিফ। তারা গুলিবিদ্ধ হয়। ১৩ বছরের কিশোর আব্দুর রাকিব মারা যায়। বিএসএফ দাবি করে,তারা ছিল গরু পাচারকারী। বিডিআর প্রত্যক্ষদর্শী গ্রামবাসীদের দিয়ে যখন প্রমাণ করে রাকিব নির্দোষ ছিল, তখন বিএসএফ স্রেফ ক্ষমা চায়।

২০১০ সালের মার্চে এক বাংলাদেশিকে গুলি করে হত্যা করে বিএসএফ। তার চাচা আলাউদ্দীন জানান, ছেলেটি হাত তুলে উপুড় হয়ে মাটিতে শুয়েহপড়ার পর বিএসএফ এসে তার কপালে গুলি করে।

২০১৯ সালের ১০ মে। সাতক্ষীরার সীমান্তে কবিরুল ইসলামকে ধরে নিয়ে যায় বিএসএফ। তার মুখে আর পায়ুপথে পেট্রোল ঢেলে দেয়া হয়। নির্যাতনে মারা যান কবিরুল ইসলাম।

দুই হপ্তা পরেই ২৭ মে নওগাঁর সাপাহার সীমান্তে কিশোর রাখাল আজিমুদ্দীনকে ধরে নিয়ে যায় বিএসএফ। তার সব আঙ্গুলের নখ তুলে নেয়া হয় প্লায়ার্স দিয়ে।

ওয়াহেদপুর সীমান্তে শ্যামল কর্মকারকে পিটিয়ে হত্যা করে বিএসএফ। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, পিটিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করার পর তার পিঠে গুলি করে বিএসএফ।

বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত চোরাচালানের অভয়ারণ্য। ভারত থেকে এদেশে আসে গরু, খাদ্য, মাদক আর ওষুধ। আর এদেশ থেকে যায় চামড়া, সার, ফিউয়েল আর মাছ। গরু চোরাচালান অত্যন্ত গুরুতর বিষয়। প্রতিবছর কোরবানির ইদে দেশে ৫০ কোটি টাকার গরু কেনাবেচা হয়। এর একটা বড় অংশ আসে চোরাচালানের মাধ্যমে। এছাড়াও চলে জমজমাট মাদক ব্যবসা- ফেন্সিডিল আর প্যাথেড্রিন। এসবই হয় সীমান্তরক্ষীদের নাকের ডগা দিয়ে। এই চোরাচালন দমনের নামেই বিএসএফ গুলি করে হত্যা করে বাংলাদেশিদের।

এই পুরো বিষয়টা নিয়ে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের বিন্দুমাত্র মাথাব্যথা নেই। ফেলানীর মৃত্যুর পর বিএসএফের প্রধান রমন শ্রীবাস্তব বলেছিলেন, ফেলানীর মৃত্যুতে মানুষের কষ্ট পাওয়ার কিছু নেই, কারণ সে ভারতে অনুপ্রবেশ করতে যাচ্ছিল আর এজন্য তাকে হত্যা করাটা যথাযথ।

২০১১ সালের মার্চে দ্বিপাক্ষিক এক চুক্তিতে বলা হয়েছিল, সীমান্তে কোনো প্রাণঘাতী ব্যবহার করা হবেনা। সেই বছরের সেপ্টেম্বরে আরেকটি চুক্তি স্বাক্ষর করা হয় যাতে বলা হয় দুইদেশের সীমানা সুনির্দিষ্ট করা হবে।

২০১৮ সালে আরেকটা সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়, যাতে পুনরায় সীমান্তে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার নিষিদ্ধ করার কথা বলা হয়। এই সমঝোতা ভেঙে ২০১৯ সালের ১২-১৫ জুন বিএসএফের ডিজি দাবি করেন, সীমান্তে দুষ্কৃতিকারীরা বিএসএফকে আক্রমণ করে বলেই আত্মরক্ষার্থে তারা গুলি করে। এই কথার সাথে আমরা বাংলাদেশিরা অত্যন্ত পরিচিত- র‍্যাব প্রায়ই হ্যান্ডকাফ পরিয়ে আসামী নিয়ে যাবার সময় আসামীর সঙ্গীরা র‍্যাবের ওপর হামলা করে, আত্মরখার্থে র‍্যাব গুলি চালায়ে না কোনো আসামীর সঙ্গী মরে না র‍্যাবসদস্য মরে- মরে কেবল সেই হ্যান্ডকাফ পরা আসামী। কাজেই আমাদের বুঝতে বেগ পেতে হবে না বিএসএফের ডিজি যে আসলে আমাদের হাইকোর্ট দেখাচ্ছেন।

২০১৯ সালের ডিসেম্বরে দিল্লিতে বাহিনীপ্রধান পর্যায়ের বৈঠকের ঠিক আগের দিন বিএসএফ এক বাংলাদেশিকে হত্যা করে। সেই বৈঠকে সীমান্ত হত্যা শূন্যে নামিয়ে আনার ঘোষণা দেয়া হয়। এ কেমন নিষ্ঠুর রসিকতা!

২০২০ সালের ২৩ জানুয়ারি একদিনে চারজন বাংলাদেশিকে হত্যা করে বিএসএফ। এর আগে আরো তিনজন বাংলাদেশিকে হত্যা করেছিল জানুয়ারি মাসেই।

এখন প্রশ্ন উঠতেই পারে, নেপালে একজন নেপালীকে বিএসএফ হত্যা করলে সারা নেপাল ভেঙে পড়ে বিক্ষোভে, নেপাল পালটা আঘাত হানে বিএসএফের ওপর; ইউএস-মেক্সিকো সীমান্তে একজন মেক্সিকানের মৃত্যু ইন্টারন্যাশনাল ইস্যুতে পরিণত হয় তখন আমাদের দেশের এই দশা কেন?

এর একটা বড় কারণ আমাদের সীমান্তরক্ষীদের চরম নিষ্ক্রিয়তা আর ব্যর্থতা। বিজিবি মেনেই নেয়, চোরাচালানকারী হত্যা করা জায়েজ। (অবশ্য এটা কিন্তু তাদের ঘুষ খেয়ে চোরাচালানে সাহায্য করতে বাধা দেয় না!)  এখানে আমাদের মনে রাখতেই হবে, ফেলানীর মৃত্যুর পর তার বাবা বিলাপ করছিলেন এই বলে, আমি টাকা দেয়ার পরও কেন আমার মেয়েটাকে মেরে ফেলল ওরা। অর্থের বিনিময়ে এমন চোরাচালান বা অনুপ্রবেশ কিন্তু অস্বাভাবিক ঘটনা নয় এই সীমান্তে।

বিজিবির প্রতিবাদ কেবল পতাকা বৈঠকেই সীমাবদ্ধ থাকে। আমরা ২০০৫ সালের রৌমারি আর ২০১৯ সালে একটা খণ্ড সংঘর্ষ ছাড়া তেমন আর শক্ত প্রতিক্রিয়া দেখিনি। শ্যামল কর্মকারের মৃত্যুর পর ওয়াহেদপুর সীমান্ত ক্যাম্প কমান্ডারের বক্তব্য ছিল- বিএসএফের শ্যামলকে মারার মধ্যে কোনো সমস্যা নেই।

এছাড়াও বাংলাদেশের কূটনৈতিক দুর্বলতা এখানে লক্ষ্যণীয়। আমাদের রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে প্রতিবাদের ভাষা অত্যন্ত দুর্বল। এই কূটনৈতিক নমনীয়তা অনেকাংশে সীমান্ত হত্যার পক্ষে কাজ করে।

আমাদের ভুলে গেলে চলবে না, সীমান্ত হত্যা জাতিসঙ্ঘ ১৯৪৮ সালের সর্বজনীন মানবাধিকার সনদের আর্টিকেল ৩, ৪, ৫ দ্বারা নিষিদ্ধ করেছে। ভারতের অভ্যন্তরীণ আইনও কিন্তু সীমান্ত হত্যাকে সমর্থন করেনা। বিএসএফের এই ট্রিগার হ্যাপি মনোভাব তাদের ভারতীয়দের ওপরও নির্যাতন করার সুযোগ করে দেয়। বিএসএফের হাতে নির্যাতিত হওয়া এক ভারতীয় তুতন শেখ মামলা করতে গেলে তাকে পুলিশ বলে দেয়- বিএসএফের বিরুদ্ধে মামলা তারা নিতে পারবে না। আরেক নির্যাতিত নূর হোসেনের পরিবার জানায়, সীমান্তের কর্তা বিএসএফ। তাদের বিরুদ্ধে কথা বলে লাভ নেই।

আমরা ইতোমধ্যেই দেখেছি চোরাচালানকারী পরিচয়ে অনেক সময়ই নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করে বিএসএফ। এখন তর্কের খাতিরে আমরা ধরেই নিলাম, সকল নিহত ও আহত ব্যক্তিরা চোরাচালানকারী আর অনুপ্রবেশকারী এরপরও কি গুলি করা যুক্তিযুক্ত? না। বিএসএফ তাদের ভারতের আদালতে তুলতে পারে, তাদের ওখানে আইন আছে চোরাচালানকারী ও অনুপ্রবেশকারীদের নিয়ে। মেরে ফেলা কখনোই গ্রহণযোগ্য হতে পারেনা।

সীমান্ত হত্যা বন্ধে কী উদ্যোগ নেয়া উচিত?

প্রথমত, ভারতকে নিশ্চিত করতে হবে তার সীমান্তরক্ষীরা UN Basic Principles on the Use of Force and Firearm মেনে চলে। এছাড়াও এসব হত্যাকাণ্ডের তদন্তের দায়িত্ব বেসামরিক ব্যক্তিদের দিতে হবে- যাতে ফেলানীর মত আর প্রহসনের শিকার কেউ না হয়। বিএসএফ তার সদস্যদের অপরাধের জন্য দিতে বড়ই অপারগ।

দ্বিতীয়ত, বাংলাদেশকে উচ্চপর্যায় থেকে চাপ দিতে হবে সীমান্ত হত্যা বন্ধের জন্য। নরম সুরে পতাকা বৈঠক আর নিন্দাজ্ঞাপন করে কোনো ফল আসেনা। বিজিবিকে ঢিলেঢালা প্রহরা আর দায়সারা কর্তব্যপালন করা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।

তৃতীয়ত, চোরাচালান বন্ধে দুই দেশকে কাজ করতে হবে। ঘুষ খেয়ে চোরাচালান বা অনুপ্রবেশের মত অপরাধে জড়িতদের বিচার করতে হবে।

চতুর্থত, বাংলাদেশের জনগণকে সচেতন হতে হবে। সোচ্চার হতে হবে সীমান্ত হত্যার বিরুদ্ধে। সীমান্তে যারা মারা যাচ্ছে তারা অপরাধী, এমন মনোভাব ছেড়ে ফেলতে হবে এখুনিই। দেখামাত্র গুলি করা কারোর জন্যই অনুমোদন দেয়া যাবেনা, সে অপরাধী হলে তাকে আইনের হাতে সোপর্দ করতে হবে। ইচ্ছে হলো আর গুলি করে দিলাম, এটা কেমন কথা?

আমার সোনার বাংলা লাশ হয়ে ঝুলে্ থাকে সীমান্তে, আমরা যদি এর বিহিত করতে না পারি, তবে বাংলা মায়ের সামনে মুখ দেখাতে পারব কি?

(This article was published in Chhoysho Acre news portal. The link is given below:
http://chhoyshoacre.com/Politics/Article/5ef36a5969f4f24363fa0afb/)

Comments